Header Ads

বাংলা উপন্যাস মহা মানব

        বাংলা উপন্যাস মহা মানব

       (মোঃ সোহেল আহাম্মেদ)

বাংলা উপন্যাস মহা মানব


(প্রথম পর্ব)


দিনটা ছিল শুক্রবার সকালবেলা ঘুম থেকে উড়তে আমার ভালো লাগছিল না। কেমন জানি আমার শরীরটা ম্যাচ ম্যাচ করছিল, সকালবেলা ঘুম থেকে উঠতে পারছিলাম না। শরীরটা বেশ  খারাপ লাগছিল আমার কাছে মনে হয়েছিল আর মনে হয় বাঁচবো না।মনে মনে ঠিক করলাম মাকে একটু ডাক দেই মা এসে যদি আমার মাথায় হাত বুলিয়ে দেয় আমার শরীরে সব ব্যথা ভালো হয়ে যাবে। মনে সাহস নিয়ে য়ে রুমের দিকে মুখ করে,বালিশ থেকে মাথাটা একটু উঁচু করে মৃদু সুরে আস্তে করে ডাক দিলাম মা মা ওমা শুনছো মায়ের সারা পেলাম না ।তাই মনে মনে চিন্তা করলাম মার কষ্ট করে আসার দরকার নাই বরং আমি নিজেই চলে যায় মায়ের ঘরে।দরজার করি ধরে নাড়া দিলাম বিতর থেকে  কেমন জানি একটা শব্দ আসছিল।কিন্তু দরজা খুলছে না 10 12 বার নাড়া দিলাম দরজা খুলনা তাই দরজায় একটু জোরে ধাক্কা দিলাম দরজাটা খুলে গেল দেখলাম বাবা বিছানায় নাই।এদিকে মা পেটে বালিশ চাপা দিয়ে কাতরাচ্ছে আর বলছে আর পারছিনা আমি মনে হয় আর বাঁচবোনা মায়ের ধবধবে সাদা মুখ লাল ফ্যাকাসে হয়ে গেছে আর চোখ দিয়ে পানি ঝরছে এ অবস্থায় দেখে আমার নিজের ওসুখের কথা ভুলে গেছি ।   তাকিয়ে দেখি বিছানায় এপাস ওপাশে গড়াগড়ি খাচ্ছে। আমি একটু এগিয়ে গেলাম মায়ের মাথায় হাত বুলিয়ে দিয়ে জিজ্ঞেস করলাম কি হয়েছে তোমার মা তুমি এমন করছ কেন? 

আমার কি? হয়েছে বল মা।মা  শান্ত হয়ে গেল আর বলছে আমার কিছু হয় নাই বাবা। মৃদু হেসে বলল ঠিক আছে বাবা গরম বেশি তাই খারাপ লাগছিল  আমার আর বুঝতে বাকি রইল না। মায়ের পেটে অনেক ব্যথা মায়ের এই দৃশ্য দেখে আমার চোখে পানি ধরে রাখতে পারলাম না। তাই মাকে জড়িয়ে দরলাম। কিছুক্ষণ পর আমি বুঝতে পারলাম আমার পিঠ মায়ের চোখের পানিতে ভিজে গেছে তারপর আমি মায়ের চোখের পানি সেদিন মুছে দিলাম। আমি মাকে জিজ্ঞেস করলাম বাবা কোথায় গেছে বাবা কে দেখছিনা ।

তোর বাবা থেকে উঠে কোথায় গেছে আমাকে বলে যায় নাই। এই বলে মা আমাকে বলল বাবা তুমি ঘুমাতে যাও এখন ফজরের আজান দিবে।এই বলে মা বিছানা থেকে উঠে দাঁড়ালো আমি আমার রুমে চলে গেলাম আমি আমার রুমের দরজাটা খুলে বিছানার উপর বসে আছি ফজরের আযানের অপেক্ষায়। মায়ের রুমের দরজাটা ও খোলা তাই আমি মায়ের রুমের দিকে তাকিয়ে ভাবছিলাম কি হলো মায়ের এমন করছে কেন মায়ের কি বড় অসুখ হয়েছে। আমি কি করবো আমিত অনেক ছোট বাবা কোথায় গেলে বুঝতে পারলাম না। তার কিছুক্ষণ পর আমি দেখলাম মা একহাত মুখে চেপে ধরে দৌড়ে রুম থেকে উঠানের দিকে চলে গেছে আমিও মায়ের পিছনে পিছনে দৌড়ে চলে গেলাম দেখলাম মা বুমি করছে ।বুমির সাথে রক্ত বের হচ্ছে ,এই দেখে আমার মাথাটা কেমন জানি ঘুরছে তাই। আমি জুড়ে চিৎকার দিয়ে বললাম ও বাবা বাবা এদিকে এসো দেখে যাও মাজানী কেমন করছ। কিন্তু বাবার কোন সারা পেলাম না ।তাই মাকে জড়িয়ে ধরে বললাম মা তুমি ঘরে চলো তোমাকে কাল ডাক্তার দেখাবো। মা বলল বাবা তুমি তো অনেক ছোট তোমার কাছে কি টাকা আছে ? আমাকে কিভাবে ডাক্তার দেখাবে তাই আমি মাকে আশ্বস্ত করে বললাম। মা তুমি কোন চিন্তা করবা না আমি  কাল  যে ভাবে পারি টাকার  জুগার করব। তুমি কোন চিন্তা করবা না । মা আমাকে বলল বাবা তুমি আমাকে বলেছ তাই আমি অনেক খুশি হয়েছি। তোমার বাবা আমাকে কাল ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাবে। মা আর আমি দুজনেই দুজনের ঘরে চলে গেলাম ।

তার কিছুক্ষণ পর ফজরের আজান দিল আমি অজু করে ফজরের নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করলাম আল্লাহ তুমি আমার মাকে ভালো করে দাও তার পর আমি শুয়ে ঘুমিয়ে গেলাম । সকালবেলা ঘুম থেকে উঠে নাস্তার জন্য মাকে বললাম, মা আমি নাস্তা খাব আমার অনেক ক্ষুধা লেগেছে মা বলল ঠিক আছে বাবা আর কিছুক্ষণ অপেক্ষা করো। এই নাস্তা হয়ে গেল। ঠিক ওই সময়ে  বাবা চলে এসেছে আমি বাবাকে বললাম বাবা তুমি কাল কোথায় গিয়েছিলে মার অনেক অসুখ ছিল। তোমাকে পেলাম না বাবা বলল আমি তোমার মায়ের অসুখের জন্য টাকার খোঁজে গিয়েছিলাম কিন্তু  টাকা পেলাম না কিভাবে তোমার মাকে ডাক্তার দেখাব ঠিক বুঝতে পারছিনা।

এইদিকে আমার পেনশনের সব টাকা শেষ হয়ে গেছে আর কোন টাকা নেই। কেন বাবা তুমি না আমার জন্য কিছু টাকা রেখেছো সেই টাকা উঠিয়ে ওকে আজ এই ডাক্তার দেখাও না বাবা এই টাকা খরচ করে ফেললে তোমাকে কিভাবে পড়াশোনা করাবো তোমাকে যে অনেক দূর যেতে হবে। যা আমি করতে পারি নাই আমার অনেক আশা তুমি বড় হয়ে অনেক বড় ডাক্তার হবে গরিব মানুষের চিকিৎসা করবে কোন টাকা নিবে না । বাবা ঠিক আছে বাবা আমি বড় হয়ে অনেক বড় ডাক্তার হব কিন্তু এখন তুমি মাকে ডাক্তার দেখাও।

না এই টাকা আমি উঠাতে পারবো না অনেক কষ্ট করে এই টাকা জমিয়েছি। তোমার পড়াশোনার জন্য।  আমি ঠিকই একটা ব্যবস্থা করব তোমার মায়ের জন্য তুমি কোন চিন্তা করো না তোমার এখন একটাই কাজ মন দিয়ে পড়াশোনা করা। অন্য কোন কিছু চিন্তা করবা না ঠিক আছে। আচ্ছা বাবা আমি মন দিয়ে পড়াশোনা করব । বাবা আমার স্কুলে যাওয়ার সময় হয়ে গেছে আমি নাস্তা খেয়ে স্কুলে  চলে যাই। তুমি মাকে কিন্তু ডাক্তার দেখাবে ঠিক আছে বাবা। ঠিক আছে মা তুমি আমার স্কুল ব্যাগ টা কোথায় রেখেছো খুঁজে পাচ্ছিনা আলমারি উপর দেখো আছে আচ্ছা মা ঠিক আছে আমি এখন স্কুলে চলে যাচ্ছি বাবা তুমি কিন্তু মাকে অবশ্যই আজকে ডাক্তার দেখাবে ঠিক আছে তুমি চিন্তা করো না। 

দেখছো ময়নার মা  ছেলে তোমাকে কত ভালোবাসে। আমার ছেলে,  আমাকে যত টুকু ভালোবাসে তার থেকে বেশি তোমাকে আর তোমার ছোট মেয়ে ময়নাকে ভালোবাসে আচ্ছা তুমি ভোরবেলা কোথায় গিয়েছিলে। আমি ভোরবেলা তোমার চিকিৎসা জন্য টাকার খোঁজে গিয়েছিলাম। কিন্তু পাইনি চিন্তা করো না আমার বন্ধু জয়নাল বলেছে আমাকে কিছু টাকা দিবে পরে তাকে দিয়ে দিব । কিন্তু ময়নার বাপ তুমি  কি ভাবে সুধদিবে। তোমার কাছে তো কোন টাকা নেই তোমার চাকরিও নেই। তোমার বয়স অনেক হয়ে গেছে কিভাবে দিবে টাকা।  ময়নার বাপ বলল বয়স হয়েছে তো কি হয়েছে আমার গায়ে এখনো অনেক শক্তি আছে। আচ্ছা ঠিক আছে ময়নার বাপ এখন আর শক্তি দেখানোর দরকার নেই।  এখন নাস্তা খাও তারপর যা করা তুমি করো ঠিক আছে । আচ্ছা ঠিক আছে কিগো ময়নার মা ময়না কে দেখছি না কোথায় গেছে, সকালবেলা  উঠে দাঁত মাজতে  চলে গেছে এখনো আসেনা । তুমি কি সামনে গিয়ে দেখো মেয়েটা আবার কোথায় গেছে বর্ষার সময় সব দিকে পানি কোথাও গিয়ে যদি কোনো বিপদ হয় যাও যাও তাড়াতাড়ি যাও মেয়েটাকে নিয়ে এসো আমরা তিনজন একসাথে নাস্তা খাব ঠিক আছে আমি যাচ্ছি  । 


দ্বিতীয় পর্ব


কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.