Header Ads

বাংলা উপন্যাস মহা মানব চতুর্থ পর্ব

বাংলা উপন্যাস মহা মানব

       (মোঃ সোহেল আহাম্মেদ)



চতুর্থ পর্ব


ডাক্তার বলল আগামী মাসের ৫ তারিখ রাত দশটার সময় অপারেশন করতে চাই। ভদ্রলোক বললো আচ্ছা,আমিও বললাম ঠিক আছে। ডাক্তার সাহেব আমাকে বললেন আপনার স্ত্রীকে নিয়ে আগামী মাসের ৫তারিখ রাত ৮ সময় চলে আসবেন। আমি বললাম আচ্ছা,নিয়ে আসব।ডাক্তার সাহেব কে সালাম দিয়ে আমি বাড়ি চলে গেলাম।বাড়ির উঠানে গিয়ে জুড়ে ডাক দিলাম ময়নার মা ও ময়নার মা তুমি কোথায়? এদিকে এস তোমার জন্য একটা সু-খবর আছে। আমার মেয়ে দৌড়ে এসে আমাকে জড়িয়ে ধরে আমাকে চুম্মা দিয়ে বলল আব্বা সারাদিন কোথায় ছিলা। আমি তোমাকে সারাদিন অনেক খুঁজেছি,আমি তোমাকে পাই নাই। এই বলে মেয়ে আমার কান্না করতে ছিল আমি মাথায় হাত বুলিয়ে দিতে কান্না থেমে গেলে, আমি তার হাতে কয়টা চকলেট দিলাম চকলেট নিয়ে আমার গালে চুম্মা দিয়ে চলে গেল।

আর আমি ভাবতে লাগলাম এ দুনিয়া এত মায়া এত ভালোবাসা ছেড়ে আমি কি করে চলে যাব,আমি চলে গেলে আমার ছেলে মেয়ে  স্ত্রী কি করে বাঁচবে, আমার ছেলে আমার স্বপ্ন কিভাবে পূরণ করবে না - না, আমাকে যে করেই হোক বাঁচতে হবে। আমার জন্য না আমার ছেলে মেয়ে আমার  স্ত্রীর জন্য এদিকে ময়নার মা আমাকে ডাক দিল আমি চলে গেলাম ময়নার মার কাছে।

 ময়নার মা আমাকে জিজ্ঞেস করল তুমি সারা দিন কোথায় ছিলে? কেন তুমি জান না আমি না তোমাকে বলেছিলাম আজকে আমি ডাক্তারের কাছে যাব। তোমার বেপারে কথা বলতে ডাক্তার সাহেবের সাথে। কথা বলে তোমার অপারেশনের দিন ক্ষণ ঠিক করে আসছি, আগামী মাসের ৫ তারিখ রাত ( ১০)দশটার সময় কিন্তু তুমি এত টাকা-পয়সা জোগাড় করলে কিভাবে ।কেবা দিল আমার জাননা মতে তোমার কাছে এত টাকা পয়সা  নাই। সত্যি করে বল তুমি কোথা থেকে এত টাকা পয়সা জোগাড় করেছ। ময়নার মা তুমি মনে রেখো আমি কখনো এমন কিছু করবো না সমাজের কাছে তোমার আমার  ছেলে মেয়ে আমার ফ্যামিলি কারো মাথা নত করতে হবে না বরং গর্ব করতে পারবে

এখন হাত মুখ ধুয়ে খেতে আস, আমি হাত মুখ দিয়ে খেতে আসলাম দেখি আমার ছেলে নাই। আমি ময়নার মাকে জিজ্ঞেস করলাম ময়নার মা আমার ছেলে কোথায় তাকে দেখছি না যে।তোমার ছেলে খাওয়া-দাওয়া করে তোমাকে খুঁজে না পেয়ে চলে গেছে। আমিও খাওয়া দাওয়া শেষ করে চলে গেলাম আমার  রুমে।আমি শুয়ে চিন্তা করতে ছিলাম আমার যদি এ সময় কিছু হয়, তাহলে আমার ছেলে, মেয়ে বউ এর কি হবে ভাবতে,ভাবতে আমি ও গুমিয়ে গেলাম । ঘুম থেকে উঠে  দেখি আমার ছেলে মেয়ে  দুজন আমার দুপাসে  শুয়য়ে আছে। দেখে আমার মনটা ভরে গেল। ৫ তারিখ সকাল বেলা ঘুম থেকে উঠে  ময়নার মাকে বললাম  আমাকে রাস্তা দাও আমি খেয়ে ডাক্তার সাহেবের কাছে যাব, তোমার অপারেশনের ব্যাপারে কথা বাকি আছে শেষ করে আমি চলে আসব।


খাওয়া-দাওয়া শেষ করে আমিও ডাক্তার সাহেবের সাথে দেখা করতে চলে গেলাম ,ডাক্তার সাহেবের সাথে দেখা করি এবং ভদ্রলোকের সাথে দেখা করলাম। ডাক্তার সাহেব আমাকে বললেন আপনি ও আপনার স্ত্রীকে নিয়ে আজ রাত 8 টার সময় চলে আসবেন বলে ডাক্তার সাহেব চলে গেল।ভদ্রলোককে বললাম আপনার মেয়ে কেমন আছে চলুন দেখে আসবেন  কেমন আছে। আমি গেলাম রোমে ঢুকতেই দেখি মেয়েটির চোখে নিচে কালি পড়ে গেছে, বেশি একটা কথা বলতে পারছে না।আমার মনটা অনেক খারাপ হয়ে গেছে,মেয়ে টির মাথাই হাত বুলিয়ে বললাম মা তুমি কোনচিন্তা করো না সবকিছু ঠিক হয়ে যাবে।মেয়েটির চোখ দিয়ে অঝোরে পানি  ঝড় তেই লাগল মেয়েটি কি যেন একটা আমাকে বলতে চাইল বলল কিন্তু আমি কিছুই বুঝতে পারলাম না কারণ তার কথা বলা হত এত শক্তি তার ছিল না। তাই এ দৃশ্য দেখে নিজেকে আর সামলাতে পারলাম না  আমি বাড়ির দিকে রওনা হয়ে বাড়ি চলে গেলাম। এখন সন্ধ্যা 6:30 ময়নার মাকে বললাম রেডি হও আমরা এখনই রওনা হব। বলে আমি  নামাজে দাড়িয়ে গেলাম নামাজ শেষ করে মোনাজাত ধরে আল্লাহর কাছে প্রার্থনা করে বললাম হে আল্লাহ গুনাগার একটা বান্দা আজ একটা ফরিয়াদ নিয়ে এসেছি আমার এবং আমার বউ এবং একটা নিষ্পাপ মেয়ে অপারেশন যেন ভালো ভাবে হয়,  আল্লাহ  হেফাজত করুন। না, হলে আমার পরিবারের ভিক্ষা করার ছারা কোন উপায় থাকবে না। মোনাজাত শেষ করে পিছনের দিকে তাকিয়ে দেখি আমার ছেলে রাসেল নামাজের বিছানায় মোনাজাতে,


অনেক কান্না কাটি করতে আছে তার দুচোখ দিয়ে পানি ঝড়ছে আর কি বিড়বিড় করে বলতে আছে নামাজ শেষে আমি জিজ্ঞেস করলাম তুমি কান্না করতে ছিলে কেন? বাবা আমি সব শুনে ফেলেছি কিভাবে এত টাকা যোগাড় করেছ।  কিভাবে জেনেছো আমাদের উঠান এর পাশে আমরা যখন আম গাছের নিচে খেলছিলাম তখন তুমি ও তোমার বন্ধু দুজনে বলাবলি করছিলা লক্ষ্য করেনি আমি ও ময়না সেখানে খেলা করতে ছিলাম আমি কিছু শুনে ফেলেছি ।তাই আমি নামাজ পড়ে আল্লাহর কাছে দোয়া করছি আমার মাকে যেন আল্লাহ সুস্থ রাখে।  বাবা আমি মাকে বলি নাই, তাহলে মা অপারেশন করতে রাজি হবে না। এই বলে আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্নাকাটি করতে লাগলো আমি বললাম আর কান্না করো না তাহলে তোমার মা সব জেনে যাবে বাপ ছেলে দুজনে নামাজ শেষ করে ডাক্তারের কাছে যাওয়ার জন্য রেডী হয়ে গেলাম। 

বাড়ি খালি তাই ছেলে মেয়ে দুজনকে চাচির কাছে রেখে আমরা ডাক্তারের কাছে চলে গেলাম। অপারেশন হয়ে গেল মেয়েটি বেঁচে গেল আমার স্ত্রী ও ভালো হয়ে গেল।কিন্তু আমার অবস্থা আশঙ্কাজনক ডাক্তার সাহেব আমাকে ছুটি দিলে না। প্রায় একমাস যাবত হাসপাতলে রোজ তিন চার বার করে ভদ্রলোক আমার জন্য খাবার নিয়ে আসেন। আমার বাসা থেকে আমার স্ত্রী খাবার নিয়ে আসেন আমি ভদ্রলোকের জিজ্ঞেস করলাম আপনার মেয়ে কেমন আছে। আপনার কথা আমার মেয়ে প্রতিদিন জিজ্ঞেস করে আসতে চাই কিন্তু সুস্থ না হওয়ার কারণে  আমি নিয়ে আসতে পারিনা। আমার মেয়ে এখন আমার থেকে আপনাকে বেশি ভালোবাসে।


ভাইসাব ডাক্তারের সাথে আমি কথা বলেছি আপনা কে আগামীকাল সিঙ্গাপুরে নিয়ে উন্নত চিকিৎসা করাব। আপনার বাড়ির জন্য আপনাকে কোন চিন্তা করতে হবে না আমি আমি সব কিছু দেখব। আপনার স্ত্রীর সাথে কথা বলে আপনাকে নিয়ে যাব,ভদ্রলোককে আমি অনুরোধ করে বললাম আমার কি হয়েছে আপনি দয়াকরে সত্য কথাটা বলবেন না। আচ্ছা বলবো না ভদ্রলোক বললেন আমাকে অনুমতি দিন আমি এখন আপনার বাড়িতে যাব। আচ্ছা আপনি যান আমি বাড়িতে গিয়ে সালাম দিলাম জিজ্ঞেস করলাম রাসেল বাড়িতে আছ।  সাত বছরের একটি ছেলে এসে আমাকে সালাম দিয়ে জিজ্ঞেস করল আপনি আমাকে বলছেন কেন? আমি তোমার বাবার কাছ থেকে এসেছি আমার বাবা কেমন আছে,কবে বাড়ীতে আসবে আমি বাবাকে দেখব আমি তোমাকে তোমার বাবার কাছে নিয়ে যাব আমার বাবা এখন সুস্থ আছে ডাক্তার বলেছে আর কয়েকদিন পরে বাড়িতে চলে আসবে। বিতর থেকে কে যেন বলছে রাসেল আঙ্কেলকে বাড়ির ভিতরে নিয়ে এসো আঙ্কেলকে বাড়ির ভিতরে নিয়ে আমার ঘরে বসতে দিলাম । মা আমাকে চা নাস্তা  আংকেল কে   দিয়ে এসো আঙ্কেল খাওয়া-দাওয়া শেষ করে আমাকে বলল বাবা তোমার মাকে বলো আমি ডাকছি। পর্দার আড়াল থেকে বলল আমি তো আপনাকে চিনি না আপনি কাকে চান কার কাছে এসেছেন  রাছেলের বাবা  আপনার কাছ থেকে কোন টাকা নিয়েছিল আপনি নিতে এসেছেন?


প্রথম পর্ব


















কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.