বাংলা উপন্যাস মহা মানব ষষ্ঠ পর্ব
বাংলা উপন্যাস মহা মানব
(মোঃ সোহেল আহাম্মেদ)
ষষ্ঠ পর্ব
তার পর আমি তাকে সব কিছু খুলেই বললাম আমরা দুজনে মিলে ঠিক করলাম আমাদের এমন কিছু করতে হবে যাতে আমাদের নিজে দের পরিবার ও আমাদের সমাজের উপকারে আসে। তাই আমি ও রাসেদ দুজনে চিন্তা করার জন্য ৭ সাত দিনের সময় নিলাম । তার পর দুই জন যার যার বাড়ির দিকে রওনা হলাম ,কি করা যায় ভাবতে ভাবতে বাড়ির দিকে রওনা হলাম । কিছুদূর যেতেই বাতাসে অনেক জুড়ে কান্নার আওয়াজ ভেসে আসছে। আমি থেমে গেলাম বাড়ির পাশে গিয়ে আমি ডাকতে লাগলাম বাড়িতে কেউ ছেন। ৫ বার ডাকার পর ছোট্ট একটা মিষ্টি মেয়ে কান্না করতে করতে আমার কাছে আসল আমাকে সালাম দিয়ে জিজ্ঞেস করল ভাইয়া আপনি কার কাছে আসছেন। আমি মেয়েটিকে তার নাম জিজ্ঞেস করলাম সে আমাকে কান্না সুরে বলল আমার নাম মোসাম্মৎ রাহিমা আক্তার আমি তাকে মাথায় হাত বুলিয়ে জিজ্ঞেস করলাম বোন তুমি কান্না করছো কেন ?বোন বলার সাথে সাথে সে আমাকে জড়িয়ে ধরে কান্না করতে লাগল । আর আমাকে বলল ভাইয়া আমার অনেক ক্ষুধা আমাকে কিছু খেতে দিবা দুই দিন হল আমি কিছু খাই নাই তাই বাবা মা দুজনে ঝগড়া করছে মেয়েটির কথা শুনে আমার নিজেকে অনেক অসহায় মনে হয়েছে।কিন্তু আমি নিরুপায় কিছুই করার ছিলনা তাই বুকের কষ্ট চেপে এখান থেকে কিছু না বলে আমি চলে গেলাম। মেয়েটি দূর থেকে আমার দিকে ফেল ফেল করে তাকিয়েছিল আমি কি করব বুঝতে পারছিলাম না। তাই আমি তাড়াতাড়ি করে বাড়ির দিকে রওনা হলাম বাড়িতে গিয়ে মাকে বললাম মা আমাকে কিছু খাবারদিবা মা আমাকে বললো কেন বাবা এখন খাবার দিয়ে তুমি কি করবা আমরাও তো খাওয়ার জন্য অনেক কষ্ট করতেছি মা আমার ভাগের খাবারটা একটা প্লেটে করে আমাকে দিয়ে দাও কেন? আমি মাকে সব কিছু খুলে বললাম তারপর মা মায়ের বাঘের খাবার টুকু আমাকে দিয়ে বলল যাও বাবা মেয়েটিকে দিয়ে আস আমি মনের আনন্দে তাড়া তাড়ি করে চলে গেলাম গিয়ে বাড়ির পাশে আমি আবারও ডাকতে লাগলাম মেয়েটি আবার আসল আমি তাকে নিজ হাতে খাইয়ে দিলাম।
কিযে আনন্দ লাগছিল আমার। আমি ভাষায় প্রকাশ করতে পারব না
নিজেকে অনেক হালকা মনে হচ্ছিল আর মনে মনে ভাবছিলাম এরকম যদি আমি সবসময় করতে পারতাম
তাহলে আমার কত আনন্দ লাগত আল্লাহ আমাকে তৌফিক দান করুন যাতে করে আমি গরিব ও অসহায়দের
সাহায্য সহযোগিতা করতে পারি ।আমি মনে মনে প্রতিজ্ঞা করলাম আমাকে কোচিং সেন্টার টা যেভাবেই
হউক আরম্ভ করতে হবে ।তারপর আমি বাড়িতে চলে গেলাম ফ্রেশ হয়ে খাওয়া-দাওয়া করে চেষ্টা
করছিলাম ঘুমাতে কিন্তু কিছুতেই ঘুম আসছিল না অনেকক্ষণ পর ঘুম আসবে আসবে এরকম ভাব এই সময় বাবার গলার আওয়াজ শুনতে
পেলাম বাবা আমাকে ডাকছে আমিও শুয়ে থাকতে পারিনি বাবা ডাকে সাড়া দিতে বাবার কাছে চলে
গেলাম। বাবাকে জিজ্ঞেস করলাম বাবা তুমি ডাকছ কেন কি হয়েছে তোমার বাবা আমাকে বলল।আমার
শরীরটা বেশি ভালো না তোর মাকে বল আমাকে যেন ঔষধ টা দিয়ে যায়। আচ্ছা বাবা মার কাছে
যাচ্ছি বলব যাতে ঔষধ
টা তোমায় এসে দিয়ে যায়।আমি আর দেরি না করে তাড়া তাড়ি
করে মায়ের কাছে চলে গেলাম আমাকে বললাম বাবার শরীরটা বেশি ভালো না বাবার ঔষধ খাওয়ার
সময় হয়েছে বাবার ওষুধটা তুমি আমাকে দাও আমি নিয়ে বাবাকে দিয়ে আসি। আমার কথা শুনে
মায়ের মুখটা কেমন যেন মলিন হয়ে গেল মা বলল তুই যা আমি তোর বাবাকে ওষুধ দিয়ে আসছি আমি বললাম আচ্ছা ঠিক আছে মা তুমি
তাড়া তাড়ি করে তর বাবাকে ওষুধ দিয়ে আসব। মা-বাবার কাছেই গেল বাবাকে বলল রাসেলের
বাপ অসুস্থ শেষ হয়ে গেছে বাজার থেকে আনতে হবে কিন্তু আমার হাতে কোন টাকা নেই। তুমি
তো জান তুমি অসুস্থ হওয়ার পর থেকে সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছে হাতে কোন পয়সা নেই
কি করব তুমি একটু ধৈর্য ধর কাল নিয়ে আসব ।আমি সবকিছু শুনে নিজের সামলাতে পারছিলাম
না বাবা-মায়ের সেই করুন কথাবার্তা এর মাঝে আবার বাবার গলার আওয়াজ আমাকে ডাকছে বাবা
বলল রাসেল দেখো গেইটে কে আসছে ।কে যেন ডাকছে আমি বাবার কথা শুনে গেটের কাছে চলে গেলাম
গিয়ে দেখি সুন্দরী তরুণী মলিন মুখে ডাকছে জিজ্ঞেস করলাম আপনি কাকে ডাকছেন কাকে চাই
সে বলল আমি আঙ্কেলের কাছে এসেছিা আমি বললাম কোন
আঙ্কেল সে আমাকে বলল রাসেল ভাইয়ের আব্বা আমি তার কাছে এসেছি তারপর আমি তাকে বললাম
আমার নাম রাসেল। আমার আব্বা বাড়িতে আসেন আমি মেয়ে টিকে বাড়ির ভিতরে নিয়ে গেলাম মেয়ে
টি বাবাকে দেখে অনেক জুরে কান্না করতে লাগল বাবা মেয়েটিকে বলল মামনি তুমি কান্না করছ
কেন কি হয়েছে তোমার তুমি আমাকে বল মেয়েটি একটি।
চিঠি হাতে দিয়ে বলল আঙ্কেল এটা আমার বাবা আপনাকে দিয়ে গেছে আমি জিজ্ঞেস করলাম তোমার আব্বা কেন আসে নাই মেয়েটি আমাকে বলল আমার বাবা মারা গেছে প্রায় এক মাসের বেশি হবে। বাবা স্ট্রোক করেছিল তারপর বাবা-মা কে চিঠি দিয়ে বলল এটা তুমি তোমার আংকেলকে দিয়ে এসো চিঠি দিবার কিছুক্ষণ পরেই আমার বাবা মারা গেছে তাই আমার আসতে অনেক দেরি হল একথা বলে মেয়েটির বাবাকে জড়িয়ে ধরে অনেক কান্না করতেছিল বাবা মেয়েটিকে অনেকবার বোঝানোর চেষ্টা করল কিন্তু মেয়েটির কান্না আর থামছেনা বাবা মেয়েটির মাথায় হাত দিলে চোখের পানি মুছে দিয়ে বলল তোমার বাবা নেই তো কি হয়েছে আমরা আছি না আমি তোমার বাবার মত তোমার বাবা যত টুকু তোমাকে ভালবাসত আমিও তোমাকে এতটুকু ভালোবাসব মেয়েটির কান্নার শব্দ কিছুটা থেমে গেল ভাঙ্গা ভাঙ্গা গলায় মেয়েটি বাবাকে বলল এজন্যই তো আমি আপনাদের কাছে এসেছি বাবা আর মেয়ের দুজনের কান্না দেখে আমার মা এবং আমি কান্না করতে আরম্ভ করে দিলাম নিজেকে যেন আর সামলাতে পারছিনা ।কিন্তু মেয়েটিকে দেখে অনেক চেনা চেনা মনে হচ্ছে ঠিক মনে পড়ছে না।। বাবা মাকে বলল রাসেলের মা তুমি মেয়েটিকে নিয়ে হাত মুখ ধুয়ে কিছু খেতে দাও তারপর সব কিছু শুনব মেয়েটিকে নিয়ে চলে গেল মেয়েটি নিজেই হাত মুখ ধুয়ে মায়ের কাছে এসে বসলো মায়ের কাছে এসে বসার পর মা তাকে মাথায় হাত বুলিয়ে বল মা তুমি আর কান্না করো না তোমার মা-বাবা কেউ নেই তাতে কি হয়েছে আমি আছি।
আমি তোমাকে অনেক আদর করব মেয়েটির মৃদু হেসে বলল মা আমি যদি আপনাদের বাড়িতে থাকি আপনাদের কোন সমস্যা হবে মা। মেয়েটিকে বলল মায়ের কাছে মেয়ে থাকবে তাতে কি সমস্যা। কিন্তু মা আমরা তো অনেক গরীব তুমি এখানে থাকতে পারবে মেয়েটি বলল যে জায়গা মায়ের ভালোবাসা আছে সে জায়গায় না খেয়ে থাকতে পারব। মা মেয়েটি কে বলল এখন আর কোন কথা হবে না তুমি চুপ কর আমি তোমার জন্য খাবার নিয়ে আসছি বলে খাবারের জন্য গেল খাবার নিয়ে এসে নিজে খাইয়ে দিলাম।মেয়েটি খাচ্ছিল আর তার চোখ দিয়ে পানি ঝরছিল মা জিজ্ঞেস করল তুমি কান্না করছ কেন মেয়েটি বলল আজ কতদিন পরে মায়ের হাতে খাচ্ছি আনন্দে আমার কান্না চলে আসছে। আজ আমার মায়ের কথা অনেক বেশি মনে পড়ছে মা আমাকে অনেক আদর করত আজ কতদিন হল মাকে দেখে না তাই মনটা বেশি ভালো লাগছেনা।
কিন্তু মা তোমার স্পর্শে আমার আজ অনেক আনন্দ লাগছে নিজেকে আরও অসহায় মনে
হচ্ছে না। মা এবং ওই মেয়ের কথা শুনে আমার চোখ দিয়ে যেন পানি ঝরছে মানুষ কতটুকু অসহায়
হতে পারে ভাবতে ভাবতে এখান থেকে চলে গেলাম আমার আর বুঝার বাকি থাকল না মেয়েটি কে এই
সেই মেয়ে যাকে বাবা কিডনি কি দিয়ে ছিলেন মেয়েটি আমাদের সাথে অনেক ভালো ব্যবহার করতে
লাগল আমরাও সবাই মেয়ের প্রতি আকৃষ্ট হয়ে গেলাম তার আচার ব্যবহার কথাবার্তা খুবই ভালো অল্প কিছুদিনের ভেতর সবার মন জয় করে নিল আমিও তাকে
মন থেকে অনেক ভালোবেসে ফেললাম এক কথায় মেয়েটির অসাধারণ অবিশ্বাস্য একটি ভাল মেয়ে
আমি চলে গেলাম এখান থেকে বাবার সাথে গল্প করার জন্য বাবার রুমে গিয়ে দেখলাম বাবার
মনটা ভালো নেই।মমন খারাপ করে বসে আছে ।আমি বাবাকে বললাম তোমার কি হয়েছে তোমার মন খারাপ
কেন? আমাকে কি বলা যাবে হা বাবা রাসেল মেয়েটা কে তুমি জান আবাবা আমি জানি মেয়েটিকে।
বাবা অনেক আদর করে মেয়েটির নাম রেখেছিল শান্ত ।বেশ কয়েকদিন হল আমাদের বাড়িতে এসেছে
সবাইকে অনেক আপন করে নিয়েছে মেয়েটা এখান থেকে চলে যাবে ভাবতে অনেক খারাপ লাগে তাই
মন খারাপ। বাবা কোথায় যাবে আমেরিকায় সেখানে তারেক আঙ্কেল থাকে কিছুদিন পর বাংলাদেশে
এসে শান্তাকে নিয়ে যাবে কিন্তু মেয়েটা জানে না সে আমাদের ছেড়ে চলে যাবে জানলে অনেক
কষ্ট পাবে তাই আমার মনটা আরো বেশী খারাপ। বাবা তোমার সাথে আমার কিছু কথা আছে কিভাবে
বলব। আমি ঠিক বুঝতে পারছিনা এত সংকোচ করছিস কেন বল বাবা তুমি জান আমাদের ফ্যামিলির
বর্তমান অবস্থা মা একা আর সামলাতে পারছে না তোমার শরীরটা ভাল না আমার বন্ধুরা মিলে
একটা কোচিং সেন্টার করার জন্য ঠিক করেছি এখানে আমাদের মত গরীবের ছেলে মেয়েদের বিনা
পয়সায় পড়াশুনা করাব আর যা আর হবে তা থেকে আমাদের সবার মাসিক একটা বেতন থাকবে বাকি
যা থাকবে তা দিয়ে গরীব ও অসহায় মানুষদের সাহায্য-সহযোগিতা কাজে লাগাব। বাবা কেমন
হবে অনেক ভালো হবে তা কবে থেকে আরম্ভ করতে চাই আমরা কালকে বন্ধুরা বসে আলোচনার পর আচ্ছা
বাবা আমার জন্য দোয়া কর যেন আমি সফল হতে পারি ।আমার দুআ তোমার জন্য সব সময় আছে তুমি
অবশ্যই সফল হবে।
বাবা আমি আসি বলে বাবার কছথেকে বের হয়ে
যাচ্ছিলাম তখন দেখি শান্তা দরজার আড়ালে থেকে সব শুনে ফেলেছে সে অনেক কান্না করছে নিস্তব্ধ
কান্না দেখে আমি তাকে জিজ্ঞেস করলম তুমি সবকিছু শুনে ফেলেছ তাই না। সে বলল হা মেয়েটিকে অনেক বোঝানোর চেষ্টা করলাম কিছুতেই সে
রাজী হয় না তাকে আমি বললাম ঠিক আছে কি করলে তুমি কান্না বন্ধ করবে সে আমাকে বলল প্রথমত
আমি তোমাদের ছেড়ে এখান থেকে কোনদিনও যাব না দ্বিতীয় তুমি তোমার বন্ধুদের সাথে আলোচনা
করবে সেখানে আমাকে নিয়ে যেতে হবে আমি তার কথা শুনে মৃদু শেষে রাজি হয়ে গেলাম। শান্তা
কান্না থামিয়ে চলে গেল আমার ছোট বোনের সাথে
ঘুরতে আমি আমার রুমে বসে আমি অনেক কল্পনা করতে লাগলাম আর কোচিং সেন্টারের পরিকল্পনার
বিষয়ে কিন্তু হঠাৎ করে আবার শান্তার কথা মনে পড়ে গেল সত্যি কথা বলতে শান্তাকে আমার
অনেক ভালো লাগে ভাল লাগে ভাল লাগা থেকে কখন ভালোবাসার রূপ নিয়েছে আমি বঝততে পারি নাই। শান্তার আচার-ব্যবহার
অনেক ভাল বুদ্ধিমতী মেয়ে দেখতে অনেক সুন্দর এক কথায় মহামায়া। যাক এসব কথা আমি শান্তা
জিজ্ঞেস করতে ভুলে গেছি সে কিসে পড়াশোনা করছে আমার মনে হয় সে এইচ এস সি অবশ্যই পাস
করেছে কিন্তু জিজ্ঞেস করতে আমার অনেক ভয় হয় যদি কিছু মনে করে তাই আমি আর জিজ্ঞেস
করি নাই।আমি শান্তার কথা ভাবতে ভাবতে আসল কথাটাই ভুলে গেছি বাবাকে বলতে তাই আমি বাবার
সাথে দেখা করতে বাবার কাছে চলে গেলাম বাবাকে আমি বললাম বাবা তোমাকে আমার আসল কথাটাই
বলতে ভুলে গেছি বাবা আমি এইচ এস সি পাস করেছি প্রায় এক মাসের বেশি হয়ে গেছে আমি এখন
ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রিপারেশন নিতে হবে। তাইত তোমাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তুমি কিসের
উপর পড়াশোনা করবা আগে সিদ্ধান্ত নাও তারপর প্রস্তুতি নাও এর জন্যই তো বাবা আমি তোমার
কাছে এসেছি। আমার মনে আছে ছোট বেলায় তুমি আমাকে বলেছিলে ডাক্তার হওয়ার জন্য তাইত
আমি সেই দিন থেকে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম আমি বড় হয়ে ডাক্তার হব। গরিব অসহায় অবহেলিত
মানুষের সেবা করব বিনা পয়সায়। আমিও তা চাই তুমি ডাক্তার হও গরীব অসহায় মানুষের সেবা
কর। কিন্তু আমি অসহায় আমার তো বাবা এত টাকা-পয়সা নেই তোমাকে ডাক্তার বানাব একথা গুলো
বলে বাবা অসহায়ের মত কান্না করতে লাগল আমি বাবার চোখের পানি মুছে দিয়ে বাবাকে আমি
বললাম বাবা তুমি শুধু আমার জন্য দোয়া কর। অবশ্যই পারব বাবা আল্লাহ চাইলে কত কিছুই
করতে পারে বাবা। আমি বাবার কাছ থেকে চলে গেলাম আমার
অনেক প্রিয় বন্ধু রাসেদের সাথে দেখা করতে।
বাবা আমি আসি বলে বাবার কছথেকে বের হয়ে
যাচ্ছিলাম তখন দেখি শান্তা দরজার আড়ালে থেকে সব শুনে ফেলেছে সে অনেক কান্না করছে নিস্তব্ধ
কান্না দেখে আমি তাকে জিজ্ঞেস করলম তুমি সবকিছু শুনে ফেলেছ তাই না। সে বলল হা মেয়েটিকে অনেক বোঝানোর চেষ্টা করলাম কিছুতেই সে
রাজী হয় না তাকে আমি বললাম ঠিক আছে কি করলে তুমি কান্না বন্ধ করবে সে আমাকে বলল প্রথমত
আমি তোমাদের ছেড়ে এখান থেকে কোনদিনও যাব না দ্বিতীয় তুমি তোমার বন্ধুদের সাথে আলোচনা
করবে সেখানে আমাকে নিয়ে যেতে হবে আমি তার কথা শুনে মৃদু শেষে রাজি হয়ে গেলাম। শান্তা
কান্না থামিয়ে চলে গেল আমার ছোট বোনের সাথে
ঘুরতে আমি আমার রুমে বসে আমি অনেক কল্পনা করতে লাগলাম আর কোচিং সেন্টারের পরিকল্পনার
বিষয়ে কিন্তু হঠাৎ করে আবার শান্তার কথা মনে পড়ে গেল সত্যি কথা বলতে শান্তাকে আমার
অনেক ভালো লাগে ভাল লাগে ভাল লাগা থেকে কখন ভালোবাসার রূপ নিয়েছে আমি বঝততে পারি নাই। শান্তার আচার-ব্যবহার
অনেক ভাল বুদ্ধিমতী মেয়ে দেখতে অনেক সুন্দর এক কথায় মহামায়া। যাক এসব কথা আমি শান্তা
জিজ্ঞেস করতে ভুলে গেছি সে কিসে পড়াশোনা করছে আমার মনে হয় সে এইচ এস সি অবশ্যই পাস
করেছে কিন্তু জিজ্ঞেস করতে আমার অনেক ভয় হয় যদি কিছু মনে করে তাই আমি আর জিজ্ঞেস
করি নাই।আমি শান্তার কথা ভাবতে ভাবতে আসল কথাটাই ভুলে গেছি বাবাকে বলতে তাই আমি বাবার
সাথে দেখা করতে বাবার কাছে চলে গেলাম বাবাকে আমি বললাম বাবা তোমাকে আমার আসল কথাটাই
বলতে ভুলে গেছি বাবা আমি এইচ এস সি পাস করেছি প্রায় এক মাসের বেশি হয়ে গেছে আমি এখন
ভর্তি পরীক্ষার জন্য প্রিপারেশন নিতে হবে। তাইত তোমাকে সিদ্ধান্ত নিতে হবে তুমি কিসের
উপর পড়াশোনা করবা আগে সিদ্ধান্ত নাও তারপর প্রস্তুতি নাও এর জন্যই তো বাবা আমি তোমার
কাছে এসেছি। আমার মনে আছে ছোট বেলায় তুমি আমাকে বলেছিলে ডাক্তার হওয়ার জন্য তাইত
আমি সেই দিন থেকে প্রতিজ্ঞা করেছিলাম আমি বড় হয়ে ডাক্তার হব। গরিব অসহায় অবহেলিত
মানুষের সেবা করব বিনা পয়সায়। আমিও তা চাই তুমি ডাক্তার হও গরীব অসহায় মানুষের সেবা
কর। কিন্তু আমি অসহায় আমার তো বাবা এত টাকা-পয়সা নেই তোমাকে ডাক্তার বানাব একথা গুলো
বলে বাবা অসহায়ের মত কান্না করতে লাগল আমি বাবার চোখের পানি মুছে দিয়ে বাবাকে আমি
বললাম বাবা তুমি শুধু আমার জন্য দোয়া কর। অবশ্যই পারব বাবা আল্লাহ চাইলে কত কিছুই
করতে পারে বাবা। আমি বাবার কাছ থেকে চলে গেলাম আমার
অনেক প্রিয় বন্ধু রাসেদের সাথে দেখা করতে।


কোন মন্তব্য নেই
একটি মন্তব্য পোস্ট করুন