Header Ads

মায়ের আদর


 বাংলা উপন্যাস    মায়ের আদর
          
        মোঃ সোহেল আহাম্মেদ





মায়ের আদর

আমার নাম শর্মিলা, আমার বাবা মায়ের একমাত্র আদরের সন্তান আমার বাবা  মারা গেছে অনেক দিন হয়েছে। বাবার কথা ঠিক মনে পড়ছে না। আমাকে প্রায়ই বলতো তুই যখন অনেক ছোট তখন তোর বাবা মারা গেছে। মা আমাকে অনেক কষ্ট করে মানুষ করেছে।বাবার আদর ভালোবাসা কি তা কখনো বুঝতে পারিনি।বাবার কথা তেমন মনে পড়ে না। প্রায় সময় আমার মা আমাকে বলে তোর বাবা তোর জন্য যা করেছে।এরকম ভাবে কেউ কখনো করে না। আমি মার কাছে সব সময় জিজ্ঞেস করি কিন্তু মা কোন উত্তর দেয় না।শুধু কান্না করে। 

অনেক অনুরোধ করার পর মা বলল ঠিক আছে আমি তোকে বলবো  আমি তোকে বলবো। একদিন সকাল বেলা তুই অনেক কান্না করছিলে তোর নানি বাড়ি যাওয়ার জন্য আমি তোকে অনেক বোঝানোর চেষ্টা করে ছিলাম তুই আজ না অন্য একদিন তোকে পাঠাব তর নানি বাড়িতে।তোকে এখনো ভাবে মানাতে পারেনি।তাই আমি বাধ্য হয়ে তোকে আর তোর বাবাকে পাঠালাম তর  নানু বাড়িতে। আমার শরীরে ছিল প্রচন্ড জ্বর।বাবা আমাকে বলল ঠিক আছে আমি শর্মিলাকে তার নানীর কাছে রেখে চলে আসব পরে এগিয়ে নিয়ে আসব।আম্মা বলো না ওকে সারাদিন রেখে দরকার নেই তুমি সাথে করে  নিয়ে এসো। সকাল থেকে  সন্ধ্যা হয়ে গেল তারপর তুই তোর আব্বা কেউ আসিস না।আমার শরীরটা প্রচন্ড জ্বর ছিল আমি নিজে যেতে পারি নাই অন্য একজনকে পাঠিয়ে ছিলাম সে আমাকে এসে বলল। নানি বাড়ি থেকে বেরিয়ে চলে এসেছিস সন্ধ্যার দিকে। আমার শরীরের জ্বর নিয়ে  আমি বেরিয়ে পড়লাম তোদের দুজন কে খোঁজার জন্য,কিন্তু কোন সন্ধান পেলাম না। তোদের কে না পেয়ে আমি বাড়িতে চলে আসলাম। তোদের অপেক্ষা করতে লাগলাম, তখন ভোর পেরিয়ে ফজরের আজান দিল, আমি ওযু করে নামাজের বিছনায় এসে দাড়িয়েছি ঠিক এই সময় একটা গাড়ির হরন বাজাতে শুরু করল নামাজের বিছনাটা গুছিয়ে আমি চলে গেলাম গাড়ির কাছে,গাড়ির ড্রাইভার গাড়ি থেকে নেমে এসে আমাকে জিজ্ঞেস করল। এটা কি মোল্লা বাড়ি?  আমি বললাম হ এটা মোল্লাবাড়ি, আমি রহিমুল্লাহ গার্জেনের সাথে কথা বলতে চাই।আমি রহিম মোল্লার স্ত্রী আপনি আমার সাথে কথা বলতে পারেন, আপনার বাড়িতে কোন পুরুষ লোক থাকলে তাকে পাঠিয়ে দেন তার সাথে কথা বলতে চাই। ড্রাইভারের কথা বার্তা শুনে আমার ভিতরে যেন কাপুনি উঠে গেল।

আমার কেন জানি মনে হল শর্মিলার  বাপের কিছু হয়েছে কিনা। তাহলে সে শর্মিলিকে নিয়ে সেই সকাল বেলা গেছে, এখনও আসার কোন খবর নাই। ড্রাইভার আমাকে আবারো বললা আপা বেশি দেরি করবেন না আপনার শ্বশুরকে পাঠান তার  সাথে কিছু গুরুত্বপূর্ণ কথা বলে আমি চলে যাব। আমি আর এখানে দাঁড়িয়ে থাকলাম না চলে গেলাম শ্বশুরকে ঢাকার জন্য।শশুর আসার পর ড্রাইভার তাকে বলল আপনার ছেলে এক্সিডেন্ট করেছে। শর্মিলার দাদা ড্রাইভারের সাথে কথা বলে আসল আমার কাছে। আব্বাকে জিজ্ঞেস করলাম আব্বা কি হয়েছে লোকটা কেন এসেছে আপনার কাছে। কিছু বলতে পারব না বৌমা আমার এখন বাইরে যেতে হবে।বাহিরে কোথায় যাবেন, রহিম মোল্লা এক্সিডেন্ট করেছে সে হসপিটালে আছে।কথাটা শুনে আমি আর দাড়িয়ে থাকতে পারলাম না। আমার কষ্টে যেন বুকটা ফেটে যাচ্ছে কি করব  কার কাছে যাবো ঠিক বুঝতে পারছিলাম না। তো কষ্ট লাগছিল মনে হচ্ছিল পুরো পৃথিবীটা আমার উপর ভেঙে পড়েছে।আমার মাথাটা ঝিমঝিম করছিল কিছু যেন দেখতে পারছিলাম না।কি হলো কিছুই বুঝতে পারলাম না।চোখ  খুলে দেখি আমি হসপিটালে বেডে। আমি আমার শ্বশুরকে বললাম শর্মিলির বাপ কোথায় আমাকে তার কাছে নিয়ে চলো আমি দেখতে চাই। সেই মুহূর্তে আমার মেয়ে শর্মিলা আমাকে ডাক দিল মা আবু এখানে এস আমি গিয়ে দেখি তার অবস্থা খুবই খারাপ কি যেন লাগানো কিন্তু ফেল ফেল করে তাকিয়ে  আছে আমার দিকে। আমাকে ইশারা করছে কি যেন একটা বলতে চাই কিন্তু বলতে পারছে না। 

তার চোখ দিয়ে অঝরে অশ্রু ঝরছে আর কিছু একটা বলতে যাচ্ছে কিন্তু বলতে পারছে না। আমি তার মাথায় হাত বুলিয়ে দিলাম বললাম ঠিক আছে আগে সুস্থ হও তার পরে বল। এভাবে  এক সপ্তাহ চলে গেল তার পর কিছুটা সুস্থ হল। বিছানা থেকে উঠতে পারেনা এবং ভাল ভাবে কথাও বলতে পারেনা, কিন্তু শর্মিলার দিকে তাকিয়ে থাকে।  


২য় পর্ব


কোন মন্তব্য নেই

Blogger দ্বারা পরিচালিত.